মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার দ্বিতীয় বিতর্ককে ‘নোংরা যুদ্ধ’ বলে বর্ণনা করেছে মার্কিন সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও কটু মুখোমুখি বিতর্ক সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায়নি।
ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারি ও রিপাবলিকান পার্টির ট্রাম্প স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেন। সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
সিএনএনসহ অধিকাংশ মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটে ৯০ মিনিটের এই বিতর্ক সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
বিতর্কের শুরুতে হিলারি ও ট্রাম্প পরস্পরের সঙ্গে হাত পর্যন্ত মেলাননি। বিতর্কে তাঁরা পরস্পরের প্রতি ব্যক্তিগত বিদ্বেষপূর্ণ, নোংরা ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেন। একে অন্যকে হেয় করে বক্তব্য দেন।
হিলারিকে ‘শয়তান’ বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, হিলারি মিথ্যার পর মিথ্যা বলেন। তাঁর মনে প্রচণ্ড ঘৃণা।
হিলারিকে অপদস্থ করতে তাঁর স্বামী বিল ক্লিনটনের যৌন কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টানেন ট্রাম্প। বিল ক্লিনটনকে নিয়ে কদর্য মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নারী নিগ্রহের অভিযোগ আনেন হিলারি। তিনি বলেন, নারীদের নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য তাঁর স্বরূপেরই বহিঃপ্রকাশ। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য।
ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে ই-মেইল কেলেঙ্কারির ঘটনায় হিলারিকে জেলে পাঠাবেন।
দুই প্রার্থীর এমন বিদ্বেষপূর্ণ বিতর্কে দর্শকেরা হতাশ হয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে।
বিতর্কের পর সিএনএন/ওআরসির প্রকাশ করা এক জরিপে বলা হয়, হিলারি জয়ী হয়েছেন। জরিপ অনুযায়ী, ৫৭ শতাংশ মনে করেন, হিলারি জয়ী হয়েছেন। ৩৪ শতাংশ মনে করেন, ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন।
সিএনএন/ওআরসির জরিপ অনুযায়ী, প্রথম বিতর্কেও হিলারি জয়ী হয়েছিলেন। তখন তাঁর জয়ের পক্ষে ৬২ শতাংশ মত পড়েছিল।
সিএনএন বলছে, প্রথম বিতর্কের তুলনায় দ্বিতীয় বিতর্কে হিলারি ভালো নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে দ্বিতীয় বিতর্কে যেমনটা আশা করা হচ্ছিল, তার চেয়ে ভালো করেছেন ট্রাম্প।
অশ্লীল ও আপত্তিকর একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে গত তিন দিন ট্রাম্প নিজের দলের নেতাদের কাছেই তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছেন। একের পর এক শীর্ষ নেতা ট্রাম্পের প্রতি নিজের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অনেকেই ট্রাম্পকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোরও অনুরোধ করেছেন। ট্রাম্প নিজে অবশ্য সরে দাঁড়ানোর সব দাবি এক কথায় নাকচ করে দিয়েছেন।